আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল !

মোহাম্মদ হাছিবুল হাসান (আতিক) ঃ এদিনে ‘ম্যারি এন‘ নামক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় লণ্ডভণ্ড করে দেয় দেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় পূরো উপকূল। লাশের পরে লাশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল চারদিকে।

রাতের নিস্তব্ধতা এবং অন্ধকার ভেদ করে মুহূর্তের মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল কক্সবাজার,চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায়। বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছিল।

দেশের মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে সেদিন প্রত্যক্ষ করেছিল প্রকৃতির করুণ এই আঘাত।পরদিন বিশ্ববাসী অবাক হয়ে গিয়েছিল সেই ধ্বংসলীলা ১৯৯১ ‘ম্যারি এন‘ দেখে। কেঁপে উঠেছিল বিশ্ব বিবেক।
বাংলাদেশে আঘাত হানা ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় নিহতের সংখ্যা বিচারে পৃথিবীর ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় গুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড় এ তাদের ক্ষয়-ক্ষতির দৃশ্য,আর্তমানবতার চিৎকার শুনে বাংলাদেশ পেরিয়ে এশিয়া তথা সারা বিশ্বের মিডিয়ায় স্থান পেয়েছিল এই ঘূর্ণিঝড় “৯১ ।

প্রায় ২৫০কিমি/ঘন্টা বেগে আঘাত করা এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ৬মিটার (২০ ফুট) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত করে। প্রায় ১,৩৮,০০০ মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় ১ কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়।

আবহাওয়া তাত্ত্বিক ইতিহাস –

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ২২শে এপ্রিল, ১৯৯১ বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্মচাপের সৃষ্টি হয়। বাতাসে গতিবেগের ও নিম্মচাপের আকার বৃদ্ধির সাথে সাথে এটি ২৪শে এপ্রিল ঘুর্নিঝড়ে রূপ নেয়। ঘুর্নিঝড়টি উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে এর শক্তি আরও বাড়তে থাকে। ২৮ ও ২৯ এপ্রিল এটির তীব্রতা প্রচন্ড বৃদ্ধি পায় এবং গতিবেগ ১৬০ মাইল/ঘন্টায় পৌছায় যা একটি ক্যাটাগরী-৫ ঘূর্নিঝড়ের সমতুল্য। ২৯শে এপ্রিল রাতে এটি চট্টগ্রামের উপকূলবর্তি অঞ্চলে ১৫৫ মাইল/ঘন্টা বেগে আঘাত করে যা ক্যাটাগরী-৪ ঘূর্নিঝড়ের সমতুল্য। স্থলভাগে আক্রমণের পর এর গতিবেগ ধীরে ধীরে হ্রাস পায় এবং ৩০শে এপ্রিল এটি বিলুপ্ত হয়।

১৯৯১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকার প্রলংকারী ঘূর্নিঝড়ে নিহত সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

Related posts